চট্টগ্রাম–কক্সবাজার ১৫৯ কিলোমিটারের মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্পটি দীর্ঘদিনের। অর্থের সংস্থান না হওয়ায় প্রকল্পটি বছরের পর বছর ঝুলে আছে। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা জাইকা পুরো প্র্রকল্পে অর্থায়ন করবে বলে দীর্ঘদিন থেকে শোনা গেলেও এখনো চূড়ান্ত হয়নি কিছু। ১৫৯ কিলোমিটারের চার লেনের মহাসড়ক প্রকল্পটি এখনো প্রিলিমিনারি স্টেজে বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। ১৫৯ কিলোমিটার মহাসড়কের মধ্যে এখন শুধুমাত্র ২৪ কিলোমিটারের ১টি ফ্লাইওভার ও ৪টি বাইপাসের কাজের ঋণচুক্তি হয়েছে জাইকার সাথে। এই প্রকল্পটির কাজ (২৪ কিলোমিটারের ৪টি বাইপাস ও একটি উড়াল সড়ক) শুরু হতে সময় লাগবে কমপক্ষে আরো দুই বছর। ফলে বঙ্গবন্ধু টানেল থেকে যেসব গাড়ি পর্যটন নগরী কক্সবাজার, মহেশখালীর মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর, বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং এলএনজি টার্মিনালে যাবে, তাদের জন্য এখনই কোনো সুখবর নেই। আগের মতোই দুই লেনের সড়কে দুর্ভোগ পোহাতে হবে।
এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৗশলী শ্যামল ভট্টাচার্য আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম–কক্সবাজার ১৫৯ কিলোমিটারের মহাসড়কটি প্রথম ধাপে ৪টি বাইপাস ও একটি ফ্লাইওভারে ২৪ কিলোমিটার সম্প্রসারণ হবে। এর মধ্যে পটিয়া বাইপাস, দোহাজারী বাইপাস, লোহাগাড়া বাইপাস, চকরিয়া বাইপাস এবং সাতকানিয়া এলাকায় আড়াই কিলোমিটারের একটি উড়াল সড়ক (ফ্লাইওভার) হবে। এই প্রকল্পটিতে জাইকা অর্থায়ন করবে। তাদের সাথে প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশী টাকায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ চুক্তি হয়েছে। এর বাইরেও যদি অর্থ লাগে সেটা তারা দেবে। এখন উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) যাচাই–বাছাইয়ের কাজ চলছে। এরপর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন পাওয়ার পর পরামর্শক নিয়োগ থেকে অন্যান্য কাজ শুরু হবে। তারপর টেন্ডার হবে। ডিটেইল ডিজাইন করতেও এক বছর লাগবে। একনেকে অনুমোদনের পর টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করে কাজ শুরু করতে কমপক্ষে আরো ২ বছর সময় লাগবে। এই মহাসড়কের অবশিষ্ট অংশের প্রকল্প (২৪ কিলোমিটারের ৪টি বাইপাস ও একটি ফ্লাইওভার ছাড়া) এখনো প্রিলিমিনারি স্টেজে। সেটির ব্যাপারেও জাইকার সাথে আমাদের কথা চলছে। মোট দুই ধাপে ১৫৯ কিলোমিটার দীর্ঘ চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ককে চার লেনে বাস্তবায়নে অর্থায়নের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা জাইকা।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকল্প পরিচালকের দপ্তর থেকে জানা গেছে, চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের মধ্যে প্রথম ধাপে যে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে সেটি হলো পটিয়ার বর্তমান বাইপাসটি আরো সম্প্রসারিত করা হবে চার লেনে। পাশাপাশি দোহাজারী বাইপাস, লোহাগাড়া বাইপাস ও চকরিয়া বাইপাস সড়ক চার লেনে উন্নীত হবে। সাতাকানিয়া কেরানীহাট এলাকায় আড়াই কিলোমিটারের একটি উড়াল (ছয় লেনের) সড়ক নির্মিত হবে।
পাঠকের মতামত